রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

শিশুর ত্বক এর যত্ন


সংসারে একজন নতুন অতিথি আসার মত আনন্দ বোধহয় আর কিছুতে নেই! কোন দম্পতির ঘর আলো করে যখন সন্তান আসে, তখন সেই মুহুর্তটিকে মনে হয় বেশ সুখের, তৃপ্তির। শুরু থেকে নতুন অতিথির স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সবই প্রস্তুতি নিতে থাকেন বাবা মা। শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ তো বটেই, সেই সাথে শিশুর নাজুক শরীরের সুরক্ষার জন্যও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী। সবকিছুর পাশাপাশি শিশুর ত্বকের যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজন। আমরা আজকে জানাবো কিভাবে ১০টি উপায়ে নিবেন শিশুর ত্বকের যত্ন! তো চলুন দেখে নেই কিভাবে ১০ টি উপায়ে করবেন শিশুর ত্বকের যত্ন ।

শিশুর ত্বকের যত্ন করার উপায়

 . নবজাতক শিশুর ত্বক 

নবজাতকের জন্মের পর অন্য সবকিছুর পাশাপাশি শুরু থেকেই এ ব্যাপারটির উপর বাবা মায়ের গুরুত্ব দেয়া জরুরী সেটি হচ্ছে শিশুর ত্বক। মনে রাখবেন, জন্মের পর নবজাতক শিশুর ত্বক বেশ নাজুক থাকে। সেই সাথে শিশুর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাও। তাই একদম শুরুতেই হঠাৎ করেই কোন ধরণের ক্রিম, তেল, সুগন্ধী বা কাপড় ব্যবহার করলে তা শিশুর চামড়ায় শুষ্কতা, এমনকি লালচে র‍্যাশের মত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এই ব্যাপারগুলো নিয়ে সন্তান জন্মের আগে থেকে সাবধান হওয়া উচিৎ।

২. ভারনিক্স 

সন্তান জন্মের পর শিশুর জন্য কোমল এবং উষ্ণ আরামদায়ক জায়গার ব্যবস্থা করা। শিশু জন্মের পর তার শরীরের চামড়ায় ভারনিক্স  নামের এক ধরণের তেল জাতীয় পদার্থ থাকে। এই পদার্থ অনেকটা অ্যান্টিবডির  মত কাজ করে। বাইরের ধুলো বালি কিংবা অন্য কিছু যা শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে সব ত্বকের সংস্পর্শে আসতে বাধা দেয়।

৩. শিশুর গোসলের নিয়ম

আমাদের দেশের মায়েদের মধ্যে একটি খুবই সাধারণ ব্যাপার দেখা যায়, সন্তান জন্মের পর তার শিশুকে যত দ্রুত সম্ভব গোসল করিয়ে ফেলতে চান। সত্যি কথা বলতে এই ধরনের কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখা উচিৎ। কারণ গোসল করালে শিশুর ত্বকে প্রাকৃতিক যে তেলের স্তরটি থাকে তা সরে যাবে এবং নাজুক হয়ে পড়বে। একজন নবজাতকের জন্য গোসলের নিয়ম হচ্ছে সপ্তাহে তিনবার। তবে অবশ্যই সেটা পানি ঢেলে গোসল নয়, স্পঞ্জ কিংবা নরম কাপড় হালকা কুসুম গরম পানিতে চুবিয়ে শরীর মুছে ফেললেই হবে। এর বেশি গোসল করালে শিশুর ঠান্ডা লেগে যাবে, সেই সাথে ত্বকের তেলের আস্তর সরে গেলে একজিমার মত ভয়াবহ চামড়ার রোগ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়।

৪. নবজাতক শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা

সাধারণত মুখের লালা এবং ডায়াপার ছাড়া নবজাতক শিশু খুব একটা নোংরা হয় না। তাই সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার স্পঞ্জ দিয়ে গা মুছে দিলেই যথেষ্ট। আর দিনে একবার ক্লিনজার কিংবা অল্প একটু পানি দিয়ে মুখের ভেতরটা পরিষ্কার করে নিলেই হবে। শিশুর জন্মের পর অন্তত এক বছর এই নিয়ম অনুসরণ করা উচিৎ।

৫. বেবী প্রোডাক্ট ব্যবহার

শিশুর জন্মের পর তাদের শরীরে বিভিন্ন দেশী বিদেশী বেবী প্রোডাক্ট ব্যবহার করে থাকি। সেক্ষেত্রে কিছু বিষয় যেমন…

  • শিশুর জন্মের পর অন্তত প্রথম ৬ মাস বেবী প্রোডাক্ট সাবধানে ব্যবহার করা।
  • আপনার বংশে যদি এলার্জি কিংবা অ্যাজমা এর রেকর্ড থেকে থাকে, তাহলে ব্যবহার না করা। কারণ নামে উপকারী হলেও এইসব বেবী প্রোডাক্ট শিশুর শরীরের প্রাকৃতিক আবরণ নষ্ট করে, যার কারণে শিশুর ত্বকে স্কিন ইনফেকশন  হতে পারে।

৬. শিশুর বিছানাপত্র এবং কাপড়

নিয়মিত শিশুর বিছানাপত্র এবং কাপড় গরম পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এক্ষেত্রে  যা করা থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন…

  • সুগন্ধী ডিটারজেন্ট  ব্যবহার থেকে বিরত থাকা।
  • পরিবারের অন্য সদস্যদের জামা কাপড়ের সাথে শিশুর কাপড় না মেলানো।

৭. শিশুর ডায়াপার

 আপনার শিশুর ডায়াপার নিয়মিত চেক করবেন। অধিক সময় ধরে নোংরা ডায়াপার পরা থাকলে শিশুর চামড়ায় র‍্যাশ হতে পারে, যা শিশুর জন্য ক্ষতিকর।

৮. বেবী ওয়াইপ

 শিশুর ত্বক মোছার জন্য বাজারের বেবী ওয়াইপ  না ব্যবহার করাই ভালো, কারন বেবী ওয়াইপে থাকা ক্যামিক্যাল শিশুর ত্বকের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে। তাই এর পরিবর্তে পরিষ্কার নরম কাপড় ব্যবহার করুন।

৯. পেট্রোলিয়াম জেলী ব্যবহার

শিশুর স্পর্শকাতর অঙ্গগুলোতে পেট্রোলিয়াম জেলী ব্যবহার করতে পারেন। এছাড়া যদি বেবী ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করেন, তবে লক্ষ্য রাখবেন পাউডার যাতে শিশুর মুখের দিকে না যায়। এতে শিশুর শ্বাসের সমস্যা হতে পারে।

১০. শিশুর ত্বক ম্যাসাজের নিয়ম

শিশুর ত্বক কে আরো স্বাস্থ্যকর কর তুলতে ম্যাসাজ করতে পারেন। তবে সেটা অবশ্যই জন্মের অন্তত দশ সপ্তাহ পর থেকে। রিসার্চে দেখা গেছে শিশুকে কিভাবে স্পর্শ করা হচ্ছে, তার উপর শিশুর সুস্থতা ও বৃদ্ধি খানিকটা নির্ভর করে। শিশুর শরীর ম্যাসাজের জন্য স্পেশাল কোন টেকনিক নেই। একটি উষ্ণ রুমে শিশুকে ভাঁজ করা কম্বলের উপর উপুড় করে শোয়ান। এরপর স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ বেবী লোশন কিংবা বেবী অয়েল হাতে মেখে নিয়ে আলতো করে শিশুর শরীরে বুলান। মনে রাখবেন, শিশুর শরীরে যাতে চাপ না লাগে। এতে শিশু ব্যাথা লাগতে পারে। সাবধানে আলতো ভাবে সারা শরীরে ম্যাসাজ করুন। এতে শিশুর চামড়া নরম এবং স্বাস্থ্যকর হবে।

সুস্থ ও হাসিখুশি একজন নতুন অতিথি কে না চায়? তাই আপনার নবজাতকের ভবিষ্যৎ সুন্দর জীবনের নিশ্চয়তার লক্ষ্যে জন্ম থেকেই তার যত্ন নেওয়া জরুরী।

রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

শীতকালে চুলের যত্ন



চুলের যত্নে -
  • বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে শীতে চুল হয়ে উঠে রুক্ষ এবং খুশকির উপদ্রব হয়। খুশকির জন্য ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
  • চুল সাধারণত দু’রকম, তৈলাক্ত ও শুষ্ক। তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখা জরুরি। একদিন অন্তর অন্তর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলে ভালো। আর শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে হটওয়েল থেরাপি ভালো কাজ করে। সামান্য গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে। এরপর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলবেন।
  • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পারলে বজ্রাসনে বসে চুল আঁচড়াবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে ঘুমাতেও পারবেন।
  • শীত কালে অনেকেরই চুল রুক্ষ হয়ে যায় এং আগা ফেটে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করেন নিন। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।
  • ভিটামিন-ই চুলের জন্য অনেক ভালো। ২ দিন পর পর যেকোন তেলের সাথে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে এর তেলটি মিশিয়ে মাথায় ভালো ভাবে লাগিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখুন। সারারাত রাখলে ভালো হয়। সকালে ধুয়ে ফেলুন। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধুবেন না।
শীতকালে ত্বকের ও চুলের যত্নে কিন্তু আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। হাতের নাগালের সব ফলই প্রতিদিন খাবেন। যেমন-আপেল, আমলকী কিংবা আমড়া সে যা-ই হোক না কেন।
শীতে এইসহজ কিছু পদ্ধতিগুলো অনুসরন করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়।

বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

বিয়ের মেহেদি টিপস

কণের মনটা থাকবে ভাঙ্গা
না যদি হয় হাত মেহেদি-রাঙা

কণের প্রেম কি বিয়ের শাড়ি? নাকী গহনা? দিব্যি দিয়ে বলছি- শড়ি বা গহনার চেয়েও একজন কণের মানে বেশি স্রোত জাগায় বেলি ফুলের মালা! সুবাসিত বিয়ের সাজের সাথে রঙিন হাত না হলে কণের মন ভাংবেই। সেই অঘটন ঘটানোর কি বা দরকার! মেহেদি দেওয়ার জন্য আগে যেমন বোন ভাই ভরসা ছিল – এখন তো সেই গণ্ডি ভেঙেছে বহু আগে! সাজ সজ্জার কেন্দ্রগুলোতে মেহেদির পসরা সাজানো হয়েছে বহু আগে থেকেই। ঘরে এসেও মেহেদি দিয়ে হাত রাঙিয়ে যায় প্রশেনাল মেহেদিবাজরা। তাদের কথা না হয় একটু পরেই শোনা যাক! আপাতত আমার সাথে একটু নাহয় উকিঝুকি মারা হোক যেমন চাওয়ার তেমন মেহেদি সাজে!

হাতে সূয্যিমামা:

 যতই নতুন ট্রেন্ড আসুক কিম্বা না আসুক! আঙুরের মাথায় গাঢ় লাল আর তালুতে গোল একটা সূয্যিমামা. বাংলার চিরায়ত মেহেদি সাজ চলে এসেছে আবার ঘুরে ফিরে হাতে হাতে। অনেকেই বাসার ছোটভাইবোনদের কাজে লাগিয়ে সিম্পল সাজে নিজের কণে সাজকে করছেন সম্পূর্ণ! আর এইভাবে সাজাতে খুব বেশি ভাবনার কিছু নেই। কিছু কিচু আনন্দ না হয় ঘরের মানুষরাই শুধু ভাগ করে নিক।

হাতের আঁজলায় ফুলের ডালা

ইদানিং বেশ ট্রেন্ড চলছে শাপলা ফুলের! শাড়িতে শাপলা, কপালে শাপলা এমনকি গহনাতেও! মেহেদীর সাজেও যদি শাপলা আসে তবে মন্দ কী! হাতের পিঠে ফোটা শাপলার শুদ্ধতায় মন ভালো হবে । আর হ্যা ছবিও কিন্তু ভালো আসবে। এছাড়াও নানা রকমের ফুল তো প্রিয় মোটিফ মেহেদির সাজের জন্য। চার পাপড়ির ফুল বা গোলাপ বা যেকোনও কলি- মেহেদির সুবাসে ফুলের সাজ- মন্দ হয় না একদমই।

রিকশার মোটিফ:

এই মজার এক্সপেরিমেন্টটা কিন্তু করাই যায়। রিকশার পেছনে থাকা হংশমিথুন হাতের পিঠে চলে আসতেই পারে। আসতে পারে দস্যি কণের হাতে ”পালাবি কোথায়”। আসলে রিকশা পেইন্টে এতো এতো মোটিফ আছে সবগুলোর যেকোনও দুই তিনটিও যদি ফোটানো যায় তাহলে তো কথাই নেই। চাঁদ-তারা, ফুল, পাখি – কতকিছু যে আসতে পারে। আর তার সাথে মিলিয় ধরুন আপনার হলুদের সেটটা হলো রিকশার আসন! বাড়ির সজ্জায় থাকলো রিকশা মোটিফ! পুরো হলুদ কিন্তু একবারেই জমে যাবে!