ঘামই চুল চিটচিটে বা অয়েলি হয়ে যাওয়ার প্রধান কারণ। গরমে ঘাম ও বাতাসের ধুলাবালির কারণে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের জন্ম হয়। আর এ থেকে মাথার ত্বকে ফুসকুড়ি বা চুলকানি হতে পারে। তাছাড়াও মাথায় খুশকি, চুলে রুক্ষতা আসে, চুল মলিন হয়ে যায় এমন কি চুলও পড়তে শুরু করে।
গরমে চুল ঘেমে গেলে চুলের গোড়ায় চুলকানো ও চুল টানার কারণে গোড়া নরম হয়ে চুল পড়তে থাকে। বাইরে বাতাসে ধুলাবালির কারণে চুলে খুশকি বাড়তে থাকে। তাই এ সময় সবচেয়ে জরুরী হলো চুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। এ সময়ে প্রতিদিন চুল শ্যাম্পু করতে হবে। শ্যাম্পুর কাজ হচ্ছে চুল পরিচ্ছন্ন করা। তাছাড়া চুলে শুধু শ্যাম্পু করলেই চলবে না সাথে নিতে হবে বিশেষ পরিচর্যা। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক এই গরমে চুলের যত্নে কী কী করা উচিত।
বাইরে থেকে ঘরে ফিরে চুলের গোড়া ঘেমে
গেলে ফ্যানের ঠান্ডা বাতাসে চুলটা শুকিয়ে নিতে হবে। কোনোভাবেই ঘামে ভেজা
চুল বেঁধে রাখা যাবে না। যারা প্রতিদিন বাইরে যেতে হয় তাদের অবশ্যই
প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করতে হবে এবং চুলে শ্যাম্পু করে কন্ডিশনার লাগানো
উচিত।
চুল গুলোকে প্রতিদিন বেশি পানি দিয়ে ধুতে হবে। কারণ খেয়াল রাখতে হবে
শ্যাম্পু করার পর চুলের গোড়ায় যেন বাড়তি শ্যাম্পু না লেগে থাকে। প্রতি
রাতে চুলে তেল লাগিয়ে রাখতে পারেন। এটি চুলের ডিপ কন্ডিশনিংয়ের কাজ করবে।
চুলে তেল লাগানোর আগে তেলের সঙ্গে একটু লেবুর রস মিশিয়ে নিলে চুল
খুশকিমুক্ত থাকবে। চুল পড়া কমাতে আমলকীর রস ও ক্যাস্টর অয়েল নারিকেল
তেলের সাথে মিশিয়ে চুলের গোড়ায় মালিশ করুন। পরের দিন শ্যাম্পু করে চুল
ধুয়ে ফেলুন। এই গরমে ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা) মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য
করবে এবং এটি চুল পড়াও কমাবে।
অ্যালোভেরার রস লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা
করে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন। ঘৃতকুমারীর রস, মেথি গুঁড়া ও ত্রিফলা (আমলকী,
হরীতকী ও বহেরা ভিজানো পানি) একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করতে পারেন। এতে
চুল পড়া কমাতে সাহায্য করবে এবং চুলের সাস্থ্য ভালো করবে। চুলের পরিচর্যার
জন্য টক দই, মেহেদি পাতা, মেথি গুঁড়া ও লেবুর রস একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক
তৈরি করে নিন। এটি চুলে ৩০ মিনিটের মত লাগিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। টক
দই চুলকে ময়েশ্চারাইজ করবে। মেথি গুঁড়া খুশকি দূর করে এবং চুল ঝলমল করবে
লেবুর রস। এটি অন্তত সপ্তাহে এক দিন করা উচিত।
পাকা কলা, আমলকীর রস, মধু
এবং মেথি গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে লাগাতে পারেন। এটি একই
সঙ্গে চুল নরম করবে এবং রোদে পুড়ে লালচে হয়ে যাওয়া থেকে বাঁচাবে। এই গরমের
সময় চুলটা আঁটসাঁট করে না বেঁধে পাঞ্চ ক্লিপে হালকা করে আটকে নিন। আর এমন
হেয়ার স্টাইল করুন যেটি গরমের সময় আরামদায়ক হয়। চুল শুকাতে বা ঘাম শুকাতে
হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস ব্যবহার করা যাবে না। চুলের আগা ফেটে যাওয়া
হেয়ার ড্রায়ারের গরম বাতাস প্রধান কারণ। রোদে বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা
বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন