বুধবার, ৩০ মার্চ, ২০২২

রোদে পোড়া ত্বকের দাগ দূর করতে

রোদে কুঁচকানো ত্বক :
২৫ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সীদের ত্বকে দিনের পরিবর্তনের মাত্রাটা একটু বেশিই থাকে। এ বয়সী কারও কারও ত্বক রোদে পোড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুঁচকে আসতে থাকে। এটা এ বয়সী প্রত্যেকের শরীরের জন্য খুবই ভয়ানক। তাই এ ক্ষেত্রে হাত-পায়ের ত্বকে এমন কিছু প্যাকের ব্যবহার আনতে হবে যা কি-না রোদে পোড়া বা কুঁচকানো ত্বককে স্বাভাবিক করে তুলতে পারে। এজন্য চন্দন গুঁড়া, কাঁচা হলুদ, মাষ কলাইয়ের ডাল ও মুগ ডাল একসঙ্গে মিশিয়ে হাত-পায়ের ত্বকে লাগিয়ে ১৫/২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলতে হবে। এতে ত্বকের টানটান ভাব ফিরে আসবে, হাত-পায়ের পুড়ে যাওয়া টোনিংটা চলে যাবে এবং ত্বক আগের মতই সৌন্দর্য ফিরে পাবে।

শুষ্ক ত্বকের জন্য :
যাদের হাত-পায়ের ত্বক খুবই শুষ্ক এবং ত্বকে রোদে পোড়া ভাব রয়েছে তাদের জন্য এটি একটি উপকারী প্যাক হিসেবে ব্যবহার হতে পারে। এজন্য সয়াবিন পাউডার, দুধের সর, কাঁচা হলুদ, গাজরের রস একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে ১০/১৫ মিনিট পরে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। এই প্যাকটি শুষ্ক ত্বকের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে অনেকটা চমকের মতোই কাজ করবে।

স্বাভাবিক ত্বক :
যাদের ত্বক অতিমাত্রায় তৈলাক্ত নয় আবার শুষ্কও নয় ঠিক এমন ত্বককেই স্বাভাবিক ত্বক হিসেবে ধরা হয়। স্বাভাবিক ত্বক যাদের, তাদের জন্য এখানে দুটি প্যাক দেওয়া হলো। প্রথমটি হতে পারে কাঁচা হলুদের সঙ্গে দুধ, মধু ও অলিভ অয়েল একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে রেখে ১০/১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে। আর দ্বিতীয় প্যাকটি হতে পারে ডিমের কুসুম, এক টেবিল চামচ বেসন ও দুধ দিয়ে তৈরি সহজ একটি প্যাক। প্যাক ব্যবহারের ১০/১৫ মিনিটে ত্বক ধুয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে। এ প্যাক দুটি ব্যবহারে ত্বক তার হারানো লাবণ্য ফিরে পাবে।

তৈলাক্ত ত্বক :
যাদের ত্বক খুবই তৈলাক্ত তারা মসুরের ডাল বাটা, শসার রস ও ডিমের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। প্যাকটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুবই ফলপ্রসূ। তাই প্রথমে প্যাকটি তৈরি করে তারপর ত্বকে ভালো করে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে ১০/২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলতে হবে।

স্ক্রাবের ব্যবহার :
হাত-পায়ের কালো দাগ দূর করতে সপ্তাহে একদিন স্ক্রাব ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য প্রয়োজন হবে এক টেবিল-চামচ করে চালের গুঁড়া, ময়দা, দুধ, শসার রস ও লেবুর রস। এর সঙ্গে মেশাতে হবে এক টেবিল চামচ নারকেল অথবা তিলের তেল। আবার অলিভ অয়েলও মেশানো যেতে পারে। এর সঙ্গে আরও লাগবে আধা চা চামচ মধু। প্যাকটি ক্রিমের মতো করে মিশিয়ে প্রতিটি দাগে ঘষতে হবে। তারপর ধুয়ে টোনিং করতে হবে।

টোনিং করতে শুধু দুধ ও মধুর ক্রিমের মতো মিশ্রণ ব্যবহার করতে পারেন। হালকা ঘষে পানিতে ধুয়ে ময়েশ্চারাইজিং লোশন বা ক্রিম লাগাতে হবে।

আরও সহজ পদ্ধতিতেও দাগ দূর করতে চাইলে এক চা-চামচ লেবুর রসে এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে দাগে ঘষতে পারেন। তবে সরাসরি কখনও লেবুর রস দাগে মাখাবেন না। লেবুর রস ত্বকে সহ্য না হলে অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী ব্যবহার করতে পারেন। দুই টেবিল-চামচ ঘৃতকুমারীর শাঁসে এক চা চামচ মধু মিশিয়ে দাগে মাখালেও দাগ ধীরে ধীরে কমে আসবে।

আমাদের কিছু কিছু ত্বকের জন্য ত্বকের প্যান্টোনিংটা কিছুতেই দূর করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে ত্বকের প্যান্টোনিং ভাবটা দূর করতে ত্বকে কাঁচা হলুদের ব্যবহারটা বাড়ানো যেতে পারে। তবে ত্বকের বাহ্যিক অংশে আমরা যদি নিয়মিতভাবে সানবার্ন ব্যবহার করি তবেও আমাদের হাত-পায়ের কালো দাগ অনেকাংশে কমে আসবে।

রোদের মাঝেও ত্বকের ব্রাইটনেস বাড়াতে আমরা কেউ কেউ বিভিন্ন প্রসাধনী ব্যবহার করে থাকি। অথচ রোদে যাওয়ার জন্য এসব প্রসাধনী ত্বকের জন্য মোটেই সুফল বয়ে নিয়ে আসে না বরং ত্বককে আরও রুক্ষ-শুষ্ক করে তুলে ত্বকের পুড়ে যাওয়া কালো দাগকে বেশি করে ফুটিয়ে তোলে। এই প্যাকগুলো নিয়মিত ব্যবহারে আমরা আমাদের শরীরের রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বক ও হাত-পায়ের কালো দাগকে সহজেই দূর করতে পারি। রোদ থেকে বাঁচতে নিত্যদিনের ব্যবহারে সুতি কাপড়, সানগ্গ্নাস ও রোদ প্রটেক্টেড ছাতা ব্যবহার করতে পারি। তাহলে খুব সহজেই আমাদের ত্বক রোদে পুড়ে যাওয়া থেকে রক্ষা পাবে। তাই যতটা সম্ভব তীব্র রোদের হাত থেকে দূরে থাকতে হবে।

শুক্রবার, ১১ মার্চ, ২০২২

গরমে ত্বকের যত্নের গোপন ফর্মুলা


পানি পান :
পানি শরীরে আর্দ্রতা আনার পাশাপাশি ত্বককে করে তোলে সজীব। গ্রীষ্মে ত্বক সুন্দর রাখতে প্রয়োজন প্রচুর পানি পান করা।

ত্বক পরিষ্কার রাখা :
গরমে ত্বক পরিষ্কার রাখা জরুরি। সকালে ঘুম থেকে জেগে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ত্বক পরিষ্কার করুন। নিয়ম করে ত্বক পরিষ্কার করতে ভুলবেন না। কমলালেবুর রস ময়েশ্চার হিসেবে ভালো কাজ করে। সঙ্গে দুধ ও ময়দা মিশিয়ে মুখের ত্বক পরিষ্কার করুন। ত্বকে অতিরিক্ত খসখসে ভাব থাকলে রাতে ঘুমানোর সময় ত্বক পরিষ্কার করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন।

রোদ এড়িয়ে চলা :
গ্রীষ্মে ত্বকের সুস্থতার অন্যতম শর্ত হচ্ছে রোদ থেকে দূরে থাকা। নইলে রোদে পুড়ে ত্বকে দেখা দেবে কালচে ভাব। রোদে পোড়া দাগ দূর করতে লেবুর রস কার্যকর। পেঁপে প্রাকৃতিক ক্লিনজার হিসেবে ভালো কাজ করে। ত্বক পরিষ্কার করতে দুই টেবিল চামচ পেঁপের পেস্টের সঙ্গে এক চা চামচ মধু ও একটা ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে ফেসপ্যাক হিসেবে ব্যবহার করলে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

ত্বক শীতল রাখা :
এই সময়ে ত্বকের শীতলতা খুব প্রয়োজন। এক টেবিল চামচ কোরানো শসার সঙ্গে এক টেবিল চামচ টক দই মিশিয়ে ত্বকে মাখুন। ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এ ছাড়া মুখ ধোয়ার পানিতে দু-এক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে নিন; সতেজ অনুভূতি পাবেন।
ওয়াটার বেজ্ড ময়েশ্চারাইজার :
গরমের সময় ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার বন্ধ করবেন না। ময়েশ্চারাইজার ত্বকে আর্দ্রতা জোগানোর পাশাপাশি ত্বককে নরম রাখে। গরমের সময় ওয়াটার বেজ্ড ময়েশ্চারাইজার বেছে নিন ত্বকের যত্নে। এ ছাড়াও ওয়াটার বেজ্ড বা পানিনির্ভর প্রসাধনী ব্যবহার করুন। তেলের প্রাধান্য আছে এমন প্রসাধনী ব্যবহার থেকে দূরে থাকুন।

এসবের পাশাপাশি আরও কিছু দিক খেয়াল রাখা জরুরি:

_গরমে যাদের ঘামাচি হয়, নিমপাতার রস ব্যবহারে তারা উপকার পাবেন। ঘাম বেশি হলে ট্যালকম পাউডারের সঙ্গে এক চিমটি খাবার সোডা ব্যবহার করুন।

_গ্রীষ্মে ত্বক তৈলাক্ত হয়ে পড়ে। শসা বাটা ও মসুর ডাল বাটা পেস্ট করে মুখে মেখে ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। মুখের তৈলাক্ত ভাব কেটে যাবে।

_রোদেপোড়া ভাব দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা ও মোলায়েম ভাব আনতে লাউয়ের রস, তরমুজের রস বরফ করে মুখে ঘষুন।

_গরমে অনেকের ত্বকে হিট র‌্যাশ দেখা দেয়। এটি এড়াতে দইয়ের সঙ্গে হলুদ বা নিমপাতা বাটা মিশিয়ে ত্বকে মাখুন। খানিকটা লাউ থেঁতো করে সঙ্গে তুলসীপাতা ও চালের গুঁড়া মিশিয়ে ব্যবহার করলে র‌্যাশ হবে না। বাড়বে ত্বকের উজ্জ্বলতাও।