শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২

মেহেদির রঙ গাঢ় এবং হালকা করার উপায়



মেহেদির রঙ গাঢ় করার উপায়
০১. মেহেদি লাগানোর পরে যখন মেহেদি একটু একটু করে শুকাতে শুরু করবে তখন একটি পাত্রে সামান্য লেবুর রস আর চিনি মিশিয়ে তুলার বল দিয়ে রস টা নিয়ে হাতে মিশ্রণটি লাগান। মেহেদির উপর ঘষা ঘষি করবেন না। আলতো করে শুকিয়ে যাওয়া মেহেদির একটু উপর থেকে তুলার বল চিপে ফোটা ফোটা করে লেবু আর চিনির মিশ্রণটি পুরো হাতে লাগাবেন। লেবুর রস মেহেদির রঙটা পুরোপুরি মেহেদির পেস্ট থেকে বের করতে সাহায্য করে আর চিনি সেই রঙ আর মেহেদি অনেক্ষণ হাতে আটকে রাখতে সাহায্য করে। নিচে মেহেদির উপর লেবু আর চিনির মিশ্রণ দেয়ার ফলে যেরকম রঙ হয় সেই ছবি দেয়া হলো –

০২. রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ২/৩ ঘণ্টা আগে লাগান, এবং সারা রাত হাতে মেহেদি রেখে দিন। মেহেদি শুকিয়ে গেলেও হাত ধুবেন না। আপনা আপনি কিছু পড়ে যাবে আর বাকি গুলো হাতে রেখেই ঘুমাতে পারেন অথবা হাত ঘষে মেহেদি ফেলে দিতে পারেন। অন্তত ৮ ঘণ্টা পানি থেকে হাত দূরে রাখুন। যত দেরীতে পানি লাগাবেন হাতে তত বেশি রঙ গাঢ় হবে।

০৩. রঙ গাঢ় করার আরেকটি উপায় হলো চুলার কাছে দাঁড়িয়ে মেহেদি শুকানো অথবা হেয়ার ড্রায়ারের সাহায্যে মেহেদি শুকানো। শুকিয়ে গেলে মেহেদি ফেলে দিবেন না। লেবু আর চিনির মিশ্রণ দিয়ে যতক্ষণ পারেন রাখবেন।

০৪. পুরো হাতে চিকন করে ডিজাইন না করে কিছু কিছু ডিজাইন ভরাট করে দেয়া উচিত। তাহলে মেহেদির রঙ টা বেশি ফুটে উঠবে।

০৫. মেহেদি তুলে ফেলার পর Vicks Balm লাগান এবং ৪/৫ ঘণ্টা হাতে রেখে দিন। এতে নিলগিরি তেল থাকে যা রঙ গাঢ় করবে। আমি হাতের মেহেদি তুলে Vicks Balm দেয়ার পর মেহেদীর রঙ এরকম হয়েছে।

০৬. মেহেদি একটু শুকিয়ে আসা শুরু করলে জিরা ভেজানো পানিও দিতে পারেন। এতেও রঙ হবে।

০৭. ব্যথা কমানোর বিভিন্ন Balm দিলেও বলা হয় যে মেহেদির রঙ গাঢ় হয়। ধারণা করা হয় যে ব্যথা কমানোর Balm ত্বকের নিচে তাপ তৈরির মাধ্যমে মেহেদির রঙ গাঢ় করে তুলে।

০৮. চুলার উপর একটি শুকনো তাওয়ায় কয়েকটি লবঙ্গ রেখে দিন। মেহেদি তোলার পর হাত ২ টি গরম তাওয়া থেকে একটু দূরে রেখে হালকা ভাপ লাগান হাতে। এতে রঙ গাঢ় হবে।

০৯. মেহেদি পাতা সরাসরি বেটে হাতে দিলে অনেকের হাতে কমলা রঙ হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিচের যে কোনটি করা যাতে পারে –

• মেহেদি পাতা বাটার আগে মেহেদি পাতা গুলো সারা রাত গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে।
• চা পাতা জ্বাল দিয়ে সেটার মধ্যে সারা রাত মেহেদি পাতা বা মেহেদি গুঁড়ো রেখে দিন। পরের দিন বেটে হাতে লাগালে গাঢ় রঙ হবে।
• এক চা চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে নিন মেহেদি গুঁড়োর সাথে। এতেও মেহেদির রঙ গাঢ় হবে।
( এখানে ৮ এবং ৯ নাম্বার আমি নিজে চেষ্টা করে দেখিনি। এ তথ্য গুলো আমি বিভিন্ন ভাবে সংগ্রহ করেছি)

মেহেদির রঙ তুলে ফেলার উপায়ঃ
ঈদ অথবা বিয়ের অনুষ্ঠান সব শেষ কিন্তু মেহেদির রঙ যাচ্ছেনা। এ অবস্থায় কি করবেন? সাধারণত যারা ধোয়া মোছার কাজ বেশি করেন, রান্নার কাজ করেন তাদের হাত থেকে খুব সহজেই মেহেদির রঙ উঠে যায়। কিন্তু যারা এসব কাজ করেন না, তারা অন্য ভাবে হাত থেকে রঙ তুলতে পারেন। যেমন –
০১. যে কোন ব্লিচ ক্রিম হাতে লাগিয়ে শুকিয়ে নিন। এরপর হাত ঘষে দেখুন মেহেদির রঙ অনেকটাই হালকা হয়ে গিয়েছে।
০২. বেকিং সোডার সাথে লেবুর রস মিশিয়ে হাতের লাগান, শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
০৩. দোকানের মেহেদি দিলে ঘন ঘন ২/১ দিন সাবান দিয়ে হাত ধুলেই চলে যাবে তবে সেক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে হাতে।
০৪. টুথপেস্ট হাতে মেখে শুকিয়ে নিন। তারপর ২ হাত ঘষলে দেখবেন মেহেদির রঙ উঠে আসছে।

মেহেদি লাগানোর ক্ষেত্রে সতর্কতাঃ
• কালো মেহেদি ত্বকের জন্য ভালো নয়, তাই এটি ব্যবহার না করাই ভালো।
• মেহেদির কোন কেনার সময় সেটার মেয়াদ দেখে কিনুন। পুরনো হলে রঙ হবে না একটু-ও।
• পার্লারে গিয়ে মেহেদি লাগাতে চাইলে আগে দেখে নিন ভালো নতুন মেহেদি দিচ্ছে কিনা। প্রয়োজনে নিজেই মেহেদি কোন কিনে নিয়ে যান।
• মেহেদির কোন ফ্রিজে রেখে দিলে হাতে দেয়ার আগে কিছুক্ষণ স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিন। তারপর হাতে লাগান।
• শিশুদের হাতে দিতে চাইলে দোকানের মেহেদি না দিয়ে বাসায় বেটে সেই মেহেদি দিন। হয়ত খুব সুক্ষ ডিজাইন হবেনা, কিন্তু তারপরেও দিন কারণ আপনার শিশুর ত্বকের চাইতে মেহেদির ডিজাইন নিশ্চয়ই গুরুত্বপূর্ন নয়। এখন বিভিন্ন মেহেদি পাওয়া যাচ্ছে যা ৫ মিনিটেই অনেক গাঢ় রঙ হয়ে যায়, কিন্তু এগুলো শিশুদের হাতে ঘন ঘন লাগানো উচিত না, যেহেতু এগুলোতে প্রচুর কেমিকেল থাকে। এমন কি বড়দের-ও ৫ মিনিটে রঙ হয় এমন মেহেদি ব্যবহার করা ঠিক না। এগুলো দিলে অনেক সময় হাত খসখসে হয়ে যায় এবং আঙ্গুলে ঝিম ঝিম করতে থাকে। তাছাড়া এগুলো যত তাড়াতাড়ি রঙ হয় ঠিক তত তাড়াতাড়ি এগুলোর রঙ চলে যায়।

শনিবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২২

ঘরে বসেই পার্লারের মত পেডিকিউর-মেনিকিউর


প্রতিদিনের রোদ ও ধুলোবালিতে আমাদের মুখের পাশাপাশি হাত ও পাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে ত্বক কালো ও রুক্ষ হয়ে যায়। কিন্তু রূপচর্চায় আমরা হাত ও পাকে সবচেয়ে বেশি অবহেলা করে থাকি। হাত পায়ের উজ্জ্বলতা ধরে রাখার জন্য আমাদের নিয়মিত পেডিকিউর ও মেনিকিউর করা উচিত। কিন্তু পার্লারে গিয়ে পেডিকিউর ও মেনিকিউর করার তো আর সবার পক্ষে সম্ভব না। তাই আপনি বাসায় বসেই করে নিতে পারেন পার্লারের মত পেডিকিউর ও মেনিকিউর।

যা যা লাগবেঃ
পায়ের গোড়ালি ডোবে এমন একটি বড় বাটি
ব্রাশ
নেইল কাটার
ফাইলার
বাফার
কিউটিকল কাটার
শ্যাম্পু অথবা তরল সাবান
নেল পলিশ রিমুভার
পেট্রোলিয়াম জেলি/ লোশন
লেবু এবং চালের গুঁড়া, শসা গাজরের রস মিশিয়ে বানানো স্ক্রাব।

যেভাবে করবেনঃ
-প্রথমে নেইলপলিশ লাগানো থাকলে তা উঠিয়ে ফেলুন।
-গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে এতে কিছু শ্যাম্পু মেশান। এরপর এতে ৫ মিনিট হাত ও পা ভিজিয়ে রাখুন। পায়ে ব্যথা থাকলে পানিতে একটু লবণ ছিটিয়ে নিন।
-এরপর পা মুছে নখ কেটে নিন। কিউটিকলে সমস্যা থাকলে কিউটিকল কাটার দিয়ে সাবধানে অতিরিক্ত কিউটিকল সরিয়ে নিন।
-এবার ঝামাপাথর দিয়ে পায়ের নিচে ও গোড়ালি ঘষে নিন। এতে করে পায়ের মরা চামড়া উঠে যাবে।
-এরপর নখে পেট্রোলিয়াম জেলি মেখে আবার ভিজিয়ে রাখুন কিছুক্ষণ। এরপর ম্যাসাজ করে পরিষ্কার করে নিন। একটি শুকনা তোয়ালা দিয়ে পা মুছে ফেলুন।
এরপর আসবে স্ক্রাবের পালা। প্রথমে পায়ে স্ক্রাব মেখে রাখুন তিন মিনিট। তারপর ম্যাসাজ করে নিন দুই মিনিট, তারপর ব্রাশ দিয়ে ঘষে পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
-আবার পা ধুয়ে এবার নখে ও আঙুলে লেবুর রস মেখে পরিষ্কার করে নিন। নখ চকচকে করতে বাফার ঘষে নিতে পারেন। সবশেষে পা ধুয়ে মুছে ময়েশ্চারাইজার বা লোশন লাগিয়ে নিন।
ব্যাস হয়ে গেল পেডিকিওর। ঠিক একই ভাবে হাতেও সেরে নিন মেনিকিউর। প্রথমে পেডিকিউর করার পর মেনিকিউর, এতে হাতে বাড়তি চাপ পড়বে না। মাসে দুবার পেডিকিউর মেনিকিউর করলে হাত ও পায়ের কালো দাগ দূর হয়ে যায়।