রবিবার, ২ জুলাই, ২০২৩

বয়স ধরে রাখার কিছু কৌশল

ব্যায়াম

ব্যায়াম বয়সকে ধরে রাখার সবচেয়ে কার্জকর পন্থা, প্রিতিদিন হালকা ব্যায়াম করুন। অন্তত প্রতিদিন ৩০ মিনিট হাঁটুন বা বাসাতেই এক স্থানে দাঁড়িয়ে জগিং করুন। একসঙ্গে ৩০ মিনিট সম্ভব না হলে দিনের মধ্যে ৩ বার ১০ মিনিট করে করতে
প্রতিদিন ভিটামিন সি ও ই সমৃদ্ধ খাবার খান। এই দুই ভিটামিনে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা বয়স বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে রোধ করে। খাদ্য থেকেই ভিটামিন গ্রহন ভালো। সম্ভব না হলে সাপ্লিমেন্টা হিসেবে গ্রহন করতে পারেন।

শরীরের পরিবর্তনগুলো খেয়াল করুন

আমাদের শরীরে প্রতি নিয়ত পরিবর্তন ঘটছে। রক্তচাপ কমছে, বাড়ছে হৃদস্পন্দন আবার কখনো কখনো অনিয়মিত হয়ে পড়ছে। ব্যথা-বেদনা হচ্ছে। এসব লক্ষন কখনোই উপেক্ষা করবেন না। ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহন করুন। বড় কোন সমস্যা ধরা পড়ার আগেই সাবধান থাকা ভালো।

চর্বি ত্যাগ করুন

দৈনিক ৬০ গ্রামের কম চর্বি এবং ২০ গ্রামের কম স্নেহজাতীয় খাদ্য ( যেমন মাখন বা ঘি ) খাওয়ার অভ্যাস করুন। সবচেয়ে ভাল হয় যদি চর্বি জাতীয় খাবার একেবারেই ত্যাগ করতে পারেন।

দূষণ এড়িয়ে চলুন

শরীরকে সুস্থ রাখার ও বয়সের ঘোড়াকে থামানোর সবচেয়ে কার্জকর উপায় হল দূষণ এড়িয়ে চলা। আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত দূষণ ঘটে চলেছে- পরিবেশ দূষণ, শব্দ, পানি, বায়ু দূষণ ইত্যাদি। এসব পরিবেশগত সমস্যা তৈরি করছে স্বাস্থ্য সমস্যা। যতটা সম্ভব দূষণ এড়িয়ে চলুন। ধোঁয়া, উচ্চশব্দ, দুষিত পানি থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখুন। দেখবেন বয়সের ঘড়ি উল্টো ঘুরছে।

ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন

বয়স এবং উচ্চতা অনুপাতে আপনার ওজন ঠিক রাখার চেষ্টা করুন। ওজন ঠিক রাখতে প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম ও উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার কম খাওয়ার চেষ্ট করুন। পানি, ফল ইত্যাদি প্রচুর পরিমাণে গ্রহন করুন। ওজন নিয়ন্ত্রনে এলে তা ধরে রাখার চেষ্টা করুন।

বদঅভ্যাস ত্যাগ করুন

সব ধরণের বদঅভ্যাস ত্যাগ করে জীবনকে একটি ছকে বেঁধে ফেলুন। অগুছালো জীবন কখনোই শান্তিময় জীবনের নিশ্চয়তা দিতে পারে না। ধূমপান, অ্যালকোহল আসক্তি ত্যাগ করুন। দৈনিক এক প্যাকেট সিগেরেট আপনার আয়ু কমিয়ে দিতে পারে ৮ বছর। ছকে বাঁধা জীবন আপনাকে এনে দিতে পারে কাঙ্ক্ষিত তারুণ্য।

শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

দিনের শেষে কিভাবে নিজের যত্ন নিবেন

ত্বক পরিষ্কার

কিশোরী বয়সে মেকআপ করা উচিত নয়। তবে কেউ করে থাকলে, মেকআপ না তুলে কোনোভাবেই ঘুমাতে যাওয়া যাবে না। এটি সব বয়সীর জন্য বাধ্যতামূলক হলেও কিশোরী বয়সে বাড়তি খেয়াল রাখতে হবে। এই বয়সের ত্বক বেশি সংবেদনশীল থাকে। মেকআপ দেওয়া না থাকলেও শোবার আগে মুখ পরিষ্কার করে ধুতে হবে। ফেসওয়াশ বা ক্লিঞ্জিং মিল্ক দিয়ে ভালো করে মুখের ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিদিনই করতে হবে। এতে করে মুখের ত্বকে বাইরের ধুলোবালি ও ময়লা থেকে আসা ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক বাসা বাঁধতে পারবে না। ত্বক থেকে নিঃসৃত অতিরিক্ত তেলও জমবে না। লোমকূপগুলোর মুখ পরিষ্কার থাকায় ত্বক উজ্জ্বল থাকবে।

ফেসওয়াশ বা ক্লিঞ্জিং মিল্কের পরিবর্তে চালের গুঁড়ো, বেসন ও শসার রস দিয়ে ঘরে তৈরি ক্লিঞ্জিংও ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে উপকার বেশি হবে।
সেই সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন অথবা দুদিন ত্বকে টোনিং করতে হবে। কাঁচা দুধ অথবা ডাবের পানি দিয়ে টোনিং করা যায়।

মুখের ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার করুন, মিষ্টি খাবার অল্প খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুনময়েশ্চারাইজার
সুস্থ ও সুন্দর ত্বকের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো পানি। সাধারণত ত্বকের ভেতরের অংশ থেকে পানি ওপরের স্তরে এসে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখে। ত্বকে পানির অভাব হলেই ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক ও খসখসে। ময়েশ্চারাইজার ত্বকের নিচের স্তর থেকে পানিকে ওপরের স্তরে আনার কাজ করে থাকে। প্রতি রাতেই ত্বক পরিষ্কার করার পরে মুখে ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগাতে হবে। মুখের ত্বকের জন্য ক্রিম ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখুন—

* ময়েশ্চারাইজার যেন অবশ্যই মুখের ত্বকের মানানসই হয়।
* ময়েশ্চারাইজারের ধরনটি হতে হবে হালকা, অর্থাৎ ঘন বা কোনো প্রকার তেলযুক্ত হওয়া চলবে না।

হাত-পায়ের যত্ন

শুধু মুখের ত্বকের প্রতি যত্নবান হলেই চলবে না। সেই সঙ্গে যত্ন নিতে হবে হাত ও পায়ের। শোবার আগে অবশ্যই পুরো হাত-পা পরিষ্কার করে ধুতে হবে। সারা দিনের বিভিন্ন কাজে হাত-পায়ে অনেক ধুলোবালি ও ময়লা জমে থাকে। সেগুলো পরিষ্কার করতে হবে। এরপর হাত-পায়ে ময়েশ্চারাইজার লাগাতে হবে। তবে এই ময়েশ্চারাইজার অপেক্ষাকৃত ঘন প্রকৃতির হবে। হাতের কুনুই, পায়ের গোড়ালিতে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগালে ত্বক নরম হয়। এ ছাড়া কেউ চাইলে হাতের জন্য আলাদা হ্যান্ড ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন।

ঠোঁট

ঠোঁটের যত্নটা একটু আলাদা। কেননা, এর ত্বক সবচেয়ে কোমল। প্রতিদিন রাতে যাদের ঠোঁট ফাটে, তারা তো অবশ্যই, যাদের ফাটে না, তাদেরও উচিত আঙুল দিয়ে আলতো ঘষে ঠোঁট পরিষ্কার করে এতে লিপ বাম লাগিয়ে ঘুমানো।

চোখ

চোখের চারপাশের ত্বক মুখের ত্বকের তুলনায় পাতলা হয়। সে কারণে সম্ভব হলে ভিটামিন এ, সি, ই অথবা কে যুক্ত আই ক্রিম ঘুমানোর আগে ব্যবহার করা। এটি চোখের নিচের কালো দাগ দূর করে।

দাঁত

নিয়মিত রাতে ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ করা উচিত। এতে দাঁতের ফাঁকে খাবারের কণা জমে থাকতে পারে না।
এ তো গেল ত্বকের বাহ্যিক পরিচর্যার কথা। রাতের বেলা ত্বকের পরিচর্যার পাশাপাশি খাবার গ্রহণের পরিমাণ ও সময়ের দিকেও রাখতে হবে। পরিপূর্ণ পরিচর্যা তখনই হবে যখন ত্বকের বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ দুটোই সমান গুরুত্ব পাবে। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সাজেদা আক্তার জানালেন, কিশোরী বয়সটাতে মেয়েদের খাবারে প্রোটিন ও আয়রন থাকতে হবে। এক গ্লাস দুধ ও একটি ডিম তো আবশ্যক। সেই সঙ্গে সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও গরুর/খাসির কলিজা খেতে হবে লেবু দিয়ে। এ ছাড়া যে কাজগুলো করা উচিত:
* রাত আটটার মধ্যে রাতের খাবারের পর্ব চুকিয়ে ফেলতে হবে।
* রাত আটটার পর থেকে ভারী খাবার খাওয়া যাবে না। পানিও পরিমাণে কম খেতে হবে।
* ১২টায় ঘুমালে, রাত ১০টা সাড়ে ১০টার দিকে হালকা খাবার খেতে হবে। মিষ্টি জাতীয় যেমন: পুডিং, পায়েস, দুধ বা মিষ্টি দধি অল্প পরিমাণে খাবেন।
* রাতের খাবারের পর থেকে আধা গ্লাস-এক গ্লাসের বেশি পানি পান না করাই উত্তম।
* আট ঘণ্টা ঘুম এই বয়সে আবশ্যক।
* হাসিখুশি থাকা এই বয়সটাতে সবচেয়ে জরুরি। মানসিকভাবে যেমন প্রয়োজন, তেমনি হাসিখুশি থাকাটা শরীরের জন্যও উপকারী। কিশোরী বয়সে হাসিখুশি একটা মুখ। প্রাণবন্ত ও লাবণ্যময়ী হতে আর কী লাগে!
সুস্থ থাকতে পরিমিত ঘুম জরুরিআরও টিপস
শোবার আগে বালিশের কভার পাল্টিয়ে বা বালিশের ওপর একটা ধোয়া কাপড় বিছিয়ে নিতে পারেন। বালিশের কভারে জমে থাকা ধুলোবালি ত্বকের ক্ষতি করতে পারবে না।

চুলের যত্ন

প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুল ভালো করে আঁচড়িয়ে বেঁধে ঘুমালে চুল দ্রুত বাড়ে। সুন্দরও থাকে। চুলে বেণি করেই ঘুমোতে হবে তা নয়, উঁচু করে জাপানিজ পনিটেইল অর্থাৎ ঝুঁটি করেও শোয়া যায়। চুল যদি কেউ একেবারেই বাঁধতে না চায়, তাহলে একটি কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে ঘুমোতে পারে। এটি চুলকে আগা ফাটা থেকে রক্ষা করবে। সেই সঙ্গে সকালে চুলে এনে দেবে একটা ওয়েভি ভাব। এতে চুল ঘন দেখাবে।

পানি চিকিৎসা

মুখে সজোরে, শব্দ করে একনাগাড়ে ২৫ বার পানির ঝাপ্টা দেওয়া। দিনে যতবার খুশি ততবার। প্রতিদিন করতে পারেন। চেহারার সতেজ ভাব ধরে রাখবে আজীবন।