মঙ্গলবার, ৩০ অক্টোবর, ২০১৮

মুখের দাগ দূর করার ভেষজ কিছু পদ্ধতি


মুখের কালো-সাদা ছোপ ছোপ দাগ, ব্রণ বা মেছতার দাগ চেহারার সৌন্দর্য নষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। আমরা নানা প্রসাধণী এবং উপকরন ব্যবহার করি এসব দাগ দূর করার জন্য। আজকে আসুন দেখে নিই মুখের দাগ দূর করার ভেষজ কিছু পদ্ধতি।

• মুখের কালো ছোপ দূর করতে ১ চা চামচ ধনিয়া পাতার রসের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে সারারাত রেখে দিন। পরদিন সকালে উঠে ঠান্ডা পানির ঝাপটায় মুখ ধুয়ে ফেলুন। কয়েকদিন ব্যবহারেই উপকার পেতে শুরু করবেন।

 • যাদের মুখে মেছতার দাগ আছে তারা ১ চা চামচ সাদা জিরা গুঁড়া, ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ১ চা চামচ সরিষা গুঁড়া ও ১ চা চামচ আটা মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে মেছতার দাগে লাগান। বিশ মিনিট রেখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

 • আপনার মুখে যদি ব্রণের দাগ থাকে, তাহলে প্রতিদিন গোলাপজল দিয়ে মুখ ধুয়ে নিন। দেখবেন ব্রণের দাগ হালকা হয়ে যাবে।

• মুখে ক্লান্তির ছাপ পড়ে গেলে সেই ছাপ কাটাতে চন্দন বাটা, তুলশি বাটা, গোলাপজল মিশিয়ে গলায় ও মুখে লাগান। দেখবেন ত্বক উজ্জ্বল হয়ে গেছে।

বুধবার, ২৪ অক্টোবর, ২০১৮

মাথার খুশকি দূর করতে করণীয়


নিজের চিরুনি, ব্রাশ, তোয়ালে, বালিশের কভার যথাসাধ্য পরিষ্কার এবং আলাদা রাখলে তাতেই খুশকি অনেক কমে যাবে। আর বাইরেও রয়েছে কিছু করণীয়। চলুন জেনে নিই-

টকদই ও মেহেদি বাটা একসঙ্গে মিশিয়ে পুরো মাথার চুলে লাগিয়ে রাখতে হবে ৩৫-৪০ মিনিট। পানি দিয়ে ভালোমতো ধুয়ে শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে। দু-তিনবার ব্যবহারে খুশকি চলে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে অনেক সুন্দর। দুই থেকে তিন দিন বা সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করলেই হবে।

ভিনেগার ও পানি মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগালেও খুশকি কমে যেতে পারে।
অতিরিক্ত খুশকি তাড়াতে মাথায় তেল দেয়া বন্ধ রাখতে হবে। খুশকিরোধী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুলের গোড়া পরিষ্কার রাখতে হবে। একদিন পরপর শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হয়। দুই সপ্তাহের মধ্যে খুশকি কমে যেতে পারে।

মেথিবাটা, পেঁয়াজ, নিমপাতা, লেবুর রস, টকদই একসঙ্গে মিশিয়ে চুলের গোড়াায় লাগিয়ে রাখুন। ৩০-৪০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন। আপনার ব্যবহৃত চিরুনি ডেটল পানিতে ধুয়ে নিন।
কাঁচা পেঁয়াজের রস খুশকি দূর করে।

তিলের তেল, মেথি গুঁড়া করে মিশিয়ে ১৫ দিন রেখে দিতে হয়। তারপর ওই তেল দুই মাস ব্যবহার করতে হবে। তাতে খুশকির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। পাশাপাশি চুল পড়াও অনেক কমে যাবে।
পুরনো তেঁতুল গুলিয়ে মাথায় কিছুক্ষণ লাগিয়ে, পর ধুয়ে ফেললে খুশকি দূর হবে
নারী-পুরুষ উভয়েই খুশকি সমস্যায় ভুগে থাকে। নানা কারণে মাথায় খুশকি হতে পারে।  বিশেষ করে আর্দ্রতা বেশি হলে চুলের লোমকূপে ময়লা জমে গিয়ে খুশকি হতে পারে। এছাড়া আরও অন্যান্য কারণতো আছেই। তবে দৈনন্দিন চলাফেরায় একটু সচেতন হলেই খুশকি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। নিচে সেসব উপায় নিয়েই আলোচনা করা হলো :
নিয়মিত চুলের যত্ন : খুশকি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত চুলের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। এজন্য চিরুনি ও চুল মোছার তোয়ালে আলাদা রাখুন। এছাড়া চুল খুশকি মুক্ত রাখতে নিয়মিত চিরুনি, তোয়ালে, বালিশের কভার ও চাদর পরিস্কার রাখা প্রয়োজন। এমনকি ভেজা অবস্থায় চুল না আঁচড়ানো ভালো।
খাদ্যাভাস : খাদ্যাভাসও চুলের খুশকি প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। এজন্য প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা এবং টাটকা ফল, সবজি ও প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
এছাড়া খুশকি দূর করতে যা করবে হবে :
১. খুশকি দূর করতে অনেকেই ছুটে চলেন নামিদামি পার্লারে। যাদের নিয়মিত পার্লারে যাওয়া সম্ভব হয় না তারা ঘরে বসে নিজেই নিতে পারেন চুলের যত্ন। এক্ষেত্রে জেনে নিন কিছু টিপস-
২. জবা ফুল, আমলকি ও জলপাই একসঙ্গে বেটে পেস্ট করে চুলে লাগিয়ে, আধা ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করলে খুশকি কমে যায়।
৩. দূর্বা ঘাস ও নিমপাতা বাটা, ভিনেগার ও শসার রস মিশিয়ে পেস্ট করে মাথার তালুতে লাগিয়ে আধঘণ্টা পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। খুশকি চলে যাবে।
৪. তুলসি পাতা বাটার সঙ্গে কর্পুর ও লেবুর রস মিশিয়ে চুলের গোড়ায় আধা ঘণ্টা রেখে দিয়ে শ্যাম্পু করুন। এতেও ভালো পাবেন।
৫. কাঁচা আমলকি ছেঁচে নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে চুলায় গরম করে অথবা রোদে ২-৩ দিন শুকিয়ে বোতলে ভরে রেখে দিন। সপ্তাহে ২ দিন সেই তেল মাথায় লাগালেও খুশকি চলে যাবে।
৬. চুলে শ্যাম্পু করার আগে মাথায় গরম তোয়ালের ভাপ দিতে হবে।
৭. মেথী বাটা, আমলকির রস, ডিমের সাদা অংশ ও টকদই, পানিতে পেস্ট করে মাথায় দিয়ে আধঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। তাতেও খুশকি চুলে যাবে।
৮. আমলকি ও শিকাকাই গুঁড়ো, নারকেল তেলের সঙ্গে পেস্ট করে চুলে দিন। শুকিয়ে গেলে শ্যাম্পু করলেও খুশকি থাকবে না।
৯. পেয়াঁজের রস মাথার তালুতে দিয়ে ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন।
১০. লেবু খুশকি দূর করে। এজন্য শ্যাম্পু করার পর এক মগ পানিতে লেবু মিশিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
১১. হেনা পাউডার, রিঠা পাউডার দিয়ে তৈরি ভেষজ প্যাক ব্যবহার করলেও খুশকি দূর হবে।
১২. ১ চা চামচ লেবুর রসের সাথে ৫ চা চামচ নারকেলের তেল ভালো করে ফেটিয়ে নিন। তারপর মাথার তালুতে লাগিয়ে ৩০-৩৫ মিনিট পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। এটিও খুশকি দূর করতে কাজ করবে।
১৩. ভিনেগার খুশকির হাত থেকে মুক্তির অন্যতম প্রধান উপাদান। নিয়মিত ব্যবহারের ফলে এতে থাকা পটাসিয়াম এবং এনজাইম ইচি স্কাল্প আর খুশকি সারিয়ে তোলে। একটি কটন প্যাডে ভিনেগার নিন। তারপর চুলে বিলি কেটে কেটে পুরো মাথায় লাগান। সপ্তাহে ২ দিন গোসলের ১ ঘণ্টা আগে লাগিয়ে রাখুন।
১৪. বেকিং সোডা খুব ভালো অ্যান্টি-ফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। এক মুঠো শ্যাম্পুর সাথে এক টেবিল চামচ সোডিয়াম বাই কার্বনেট মিশিয়ে চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে একবার করলে খুশকি দূর হবে।

১৫. এক টেবিল চামচ লেবুর রসের সাথে দুই টেবিল চামচ রসুন পেস্ট মিশিয়ে একটি প্যাক বানান। রসুন প্রাকৃতিক অ্যান্টি-বায়োটিক যা মাথার ত্বকের চারপাশে থাকা ব্যাকটেরিয়ার বংশ ধ্বংস করে। এই অ্যান্টিডেনড্রাফ ট্রিটমেন্ট চুলে ২০-৩০ মিনিট লাগিয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
১৬. খুশকি থেকে মুক্তির জন্য আরেকটি ঘরোয়া উপায় হলো ৪ টেবিল চামচ বেসনের সাথে ২ টেবিল চামচ দই মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। বেসন মাথার তালুর তেল শোষণ করে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে আর এভাবেই খুশকির সংক্রমণ প্রতিরোধ করে। গোসলের আগে এই প্যাক লাগিয়ে ১ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ফেলুন। চাইলে শুধু মাত্র পানি দিয়েও ধুয়ে ফেলতে পারেন।
১৭. আপেলে থাকা এনজাইম ডেড স্কিন সেল দূর করে। দুই টেবিল চামচ ফ্রেশ আপেলের রস ১ চা চামচ পানির সাথে মিশিয়ে কটন প্যাডের সাহায্যে চুলের গোড়ায় লাগান। ১০-১৫ মিনিট পর তা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
এরপরও যদি চুলে খুশকি হয়, তাহলে ভালো কোনো পার্লারে গিয়ে হারবাল ট্রিটমেন্ট কিংবা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এভাবে চুলের যত্ন নিলে শুধু চুলের খুশকি দূর হবে না, সেইসঙ্গে চুল হবে সুস্থ ও সুন্দর।
- See more at: http://www.bd-pratidin.com/life/2016/07/18/157533#sthash.jCAMVJxv.dpuf

মঙ্গলবার, ২৩ অক্টোবর, ২০১৮

পায়ের চামড়া সুন্দর করতে করণীয়

১। চিনি এবং বেবি অয়েলের প্যাক

১/২ কাপ চিনি, ১/২ কাপ বেবি অয়েল  এবং ৩ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। এবার এটি দিয়ে পা জোড়া ১০ মিনিট ম্যাসাজ করুন। তারপর কসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি পায়ের কালো দাগ দূর করে পাকে নরম কোমল করে তুলবে।

২। লেবুর রস এবং নারকেল তেল

১ টেবিল চামচ লেবুর রস এবং ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। এখন এই মিশ্রণটি দিয়ে ভালভাবে আস্তে আস্তে ম্যাসাজ করে নিন। আপনার হাঁটুতে যদি কালো দাগ থাকে তবে অবশ্যই হাঁটুতে এটি ম্যাসাজ করবেন। ১৫ মিনিট পর কসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

৩। বাদাম তেল

বাদাম তেল পা শাইনি করে থাকে। অল্প কিছু পরিমাণ বাদাম তেল হাতে নিয়ে ম্যাসাজ করুন। বাদাম তেল ছাড়াও যেকোন প্রাকৃতিক তেল যেমন নারকেল তেল, জোজোবা তেল বা অলিভ অয়েল দিয়ে ম্যাসাজ করুন। খেয়াল রাখবেন তেল যেন খুব বেশি না হয়ে যায়। বেশি হিয়ে গেলে তেলতেলে দেখাবে।

৪। কলা ও মধুর প্যাক

একটি পাকা কলা, কয়েক ফোঁটা বাদাম তেল, ১ টেবিল চামচ মধু এবং ১ টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি পায়ে লাগান। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে কসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকটি আপনার পায়ের ত্বক নরম ও উজ্জ্বল রাখবে।

৫। গ্লিসারিন এবং পানি

সহজ এবং কার্যকরী একটি উপায় হল গ্লিসারিন এবং পানি। অর্ধেক গ্লিসারিন এবং অর্ধেক পানি মিশিয়ে নিন। এবার একটি স্প্রে বোতলে মিশ্রণটি ঢেলে নিন। এটি নিয়মিত পায়ে লাগান।

টিপস:

১। শক্ত ব্রাশ ব্যবহার করার চেয়ে নরম ব্রাশ দিয়ে পায়ের ত্বক এক্সফ্লিয়েট করুন। এটি পায়ের ত্বকের রক্ত চলাচল সচল রেখে পায় গ্লো করে দিয়ে থাকে।
২। হাইলাইটারের সাথে ময়েসচারাইজার মিশিয়ে পায়ে ম্যাসাজ করুন। এটি দ্রুত পাকে শাইনি করে থাকে।
৩। গোসলের পর বেবি অয়েল দিয়ে পা ম্যাসাজ করবেন। এটি ত্বক অনেকটাই নরম করবে।
৪। গোসলের পানিতে এক কাপ কাঁচা দুধ মিশিয়ে নিন। কাঁচা দুধ আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে ভেতর থেকে উজ্জ্বল করবে।

শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮

হলদেটে নখ সাদা করবেন যেভাবে

বিভিন্ন কারণে হাত-পায়ের নখ হলদেটে হয়ে যেতে পারে। একটানা অনেকদিন নেইলপালিশ লাগানো থাকলে নখের রঙ হলদেটে হয়ে যায়। সাধারণত ফাঙ্গাল ইনফেকশনের জন্যই এমনটা হয়ে থাকে। এছাড়া রান্না করার সময় হাতে হলুদ লাগলেও নখ হলুদ রঙের হতে পারে। চলুন জেনে নিই নখের হলদে ভাব দূর করার কিছু উপায়-

- একটা লেবুকে অর্ধেক করে নিয়ে নখে ঘষুন, নখের হলুদ ভাব চলে যাবে। এছাড়া ভিটামিন ই ক্যাপসুল ভেঙে নখে লাগাতে পারেন। এতে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। ফলে নখে দাগ থাকবে না আর হলদে ভাবও চলে যাবে।

-একটি বাটিতে এক চামচ বেকিং সোডা ও সম পরিমাণ জল মিশ্রিত করুন। তারপর ৩০ মিনিটের জন্য এই মিশ্রনের মধ্যে আপনার নখ ডুবিয়ে রাখুন এবং সঙ্গে সঙ্গে মিশ্রণটি দিয়ে নখ ঘষুন। পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

- একটি টুথব্রাশে আপনার ডেইলি ব্যবহৃত টুথপেস্ট জেলটি নিয়ে নখের উপর খুব ভালো করে ৫ মিনিট ঘষুন। শেষে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। একদিন পর পর এই পদ্ধতিটি অনুসরণ করুন।

-একটি বাটিতে ১ চামচ বেকিং পাউডার ও ১ চামচ লেবুর রস মেশান। এবার একটি তুলোর বল নিন। বলটি মিশ্রনের মধ্যে ডিপ করুন এবং আপনার নখ এ এটি প্রয়োগ করুন। ১০  মিনিটের জন্য রেখে দিন এবং পরে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

- ২-৩ টি থেঁতো করা স্ট্রবেরি আর ১ চামচ বেকিং সোডা একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। স্ট্রবেরি আর বেকিং সোডার এই মিশ্রন ১০ মিনিটের জন্য নখের উপর ঘষুন। তারপর নখের উপর এই মিশ্রণটি ৫ মিনিটের জন্য লাগিয়ে রাখুন। শেষে হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

বুধবার, ৩ অক্টোবর, ২০১৮

উজ্জ্বল ত্বকের জন্য অসাধারণ ৩ টি ঘরোয়া স্কিন লাইটেনিং মাস্ক

আয়নায় যতবার নিজের চেহারা দেখেন ততবার হতাশাবোধ করেন? ভাবেন কেন আপনার ত্বক আর একটু উজ্জ্বল নয়? এমন অনেকেই আছেন যারা মার্কেট থেকে কতশত ব্র্যান্ডের কেমিক্যাল লোডেড স্কিন লাইটেনিং বিউটি প্রোডাক্ট কিনে থাকেন তার ইয়াত্তা নেই। এইসব প্রোডাক্টের দাম যেমন বেশি তেমন আমাদের ত্বকে এগুলোর খারাপ প্রভাবও কম নয়। যারা চান তাদের ত্বক স্বাভাবিক বা প্রাকৃতিকভাবে একটু লাইটেন বা উজ্জ্বল করে তুলবেন আজকের আর্টিকেলটি তাদের জন্য। এখানে আজ আপনাদের অসাধারণ ৩ টি স্কিন লাইটেনিং মাস্কের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবো। যেগুলো আপনি খুব সহজে ঘরে বসেই বানিয়ে নিতে পারবেন আর কোন প্রকার ত্বকের ক্ষতি হওয়া ছাড়াই আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তুলতে পারবেন।


০১। শুকনো কমলার খোসা ও দই মাস্কঃ
স্কিন লাইটেনিং এর জন্য প্রথম পছন্দ হিসেবে সবার আগে বলবো শুকনো কমলার খোসা ও দই দিয়ে তৈরি মাস্কটার। শুকনো কমলার খোসা পেতে আপনাকে যা করতে হবে তা হল কমলা ছিলে সেই খোসা একদম শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত সূর্যের আলোয় দিয়ে রাখা।

যেভাবে করবেনঃ
শুকনো কমলার খোসার গুঁড়া ১ টেবিল চামচ নিয়ে এর মধ্যে ১ টেবিল চামচ আন ফ্লেভারড দই মিশান এবং এই দুই উপাদান মিলিয়ে পেস্ট বানিয়ে ফেলুন। এবার এই পেস্ট আপনার পরিষ্কার করে ধোয়া মুখে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন এবং ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ
-এই মাস্ক ত্বকের কালোভাব দূর করে ও ত্বকের যেকোন ধরনের দাগ হালকা করে।
-এটি ত্বকের ব্ল্যাক হেডস সারিয়ে তুলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।

০২ ।টমেটো, দই ও ওটমিল মাস্কঃ
স্কিন লাইটেনিং ও ব্রাইটেনিং করতে টমেটো দই ও ওটমেল মাস্কের তুলনা হয় না।

যেভাবে করবেনঃ
১ টেবিল চামচ দই, ১ টেবিল চামচ টমেটো রস ও ১ টেবিল চামচ ওটমিল একসাথে নিয়ে মেশান। এবার এই মিশ্রণটি আপনার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ
-দই এর প্রাকৃতিক ব্লিচ উপাদান ত্বকের কালচেভাব দূর করে এবং ত্বক মশ্চারাইজ ও কোমল রাখে।
-টমেটো আর ওটমিল ত্বক উজ্জ্বল করে, আর আপনি যখন এই মাস্ক মুখে ম্যাসাজ করবেন তখন এটি আপনার ত্বকের ডেড সেল অপসারণ করে আর সাথে সাথেই আপনার ত্বকের সানবার্ন মুছে দিবে।

০৩ দুধ, মধু ও লেবুর মাস্কঃ
যেভাবে করবেনঃ
১ টেবিল চামচ দুধ, ১ টেবিল চামচ মধু ও ১ টেবিল চামচ লেবুর রস নিন। সব উপাদান একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে আপনার পরিষ্কার ত্বকে লাগিয়ে নেবেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন।

উপকারিতাঃ
-এটি আপনার ত্বক প্রাকৃতিকভাবে ক্লিনজিং করে ত্বক পরিষ্কার করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে।
-এর আরও একটি উপকারিতা হল এটি আপনার ত্বকের সফটনেস ধরে রাখে।
পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষ ফর্সা হয়ে জন্মায় না, তবে তার মানে এই নয় যে তারা সুন্দর না। সুন্দর বলতে সুস্থ, সুন্দর ও উজ্জ্বল ত্বককেও বোঝায়। তাই কেবল মাত্র ফর্সা হওয়ার জন্য নয় বরং ত্বক সুন্দর রাখতে একটু ত্বকের প্রতি যত্নবান হন।

মঙ্গলবার, ২ অক্টোবর, ২০১৮

খুঁটিনাটি সৌন্দর্য বিষয়ক টিপস

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রায়ই কার্যকর কিছু টিপস জানা না থাকায় কিংবা ভুল জানার কারণে রূপচর্চায় খানিক ব্যাঘাত ঘটে। অথচ টিপসগুলো জানা থাকলে সময়ও বাঁচে, আবার রূপচর্চায় তৃপ্তিও পাওয়া যায়। আজকে সেরকম কিছু টিপস নিয়েই আলোচনা করব আপনাদের সাথে। তো শুরু করা যাক!

০১। বেশিরভাগ চুল পরিচর্যার পণ্যগুলো চুল ভেজা থাকা অবস্থায় লাগাতে হয়। যেমনঃ জেল, মুজ, কন্ডিশনার ইত্যাদি। কারণ ভেজা চুলে এই পণ্যগুলো ভালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। কিন্তু হেয়ার স্প্রের মত পণ্যগুলো ব্যবহার করতে হয় শুকনো চুলে।

০২। যখন দেখবেন তেল এবং ফাউন্ডেশান ক্রিম আলাদা আলাদা হয়ে যাচ্ছে, তখন বুঝে নেবেন যে এই ফাউন্ডেশানটি ফেলে দেয়ার সময় হয়ে এসেছে। ক্রিম ও বেশি তেলযুক্ত ফাউন্ডেশানের সাধারণত ২ বছর পর্যন্ত মেয়াদ থাকে। মেয়াদ বেশিদিন ধরে রাখতে ব্রাশ ব্যবহার করুন হাত দিয়ে ধরার বদলে।

 ০৩। স্কিন কন্ডিশনার তৈরি করতে ১ টেবিল চামচ মধুর সাথে ২ টেবিল চামচ মিল্ক ক্রিম মেশান। কয়েক মিনিট রেখে ত্বক ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন খুব ভালো কাজে দেয়!

০৪। ত্বকের বলিরেখা কমাতে, রোদে পোড়া ত্বকের যত্নে এবং ত্বকের তৈলাক্ততা কমাতে টমেটোর কোন তুলনাই নেই! তাই আপনার খাদ্যাভ্যাসে নিয়মিত টমেটো রাখার চেষ্টা করুন।

০৫। শক্ত ও উজ্জ্বল নখের জন্য সপ্তাহে একদিন নখের ওপর ১০ মিনিট জলপাইয়ের তেল ও লবণ লাগিয়ে রাখুন।

০৬। মেহেদির রঙ গাঢ় করার জন্য মেহেদি শুকানোর পর হাতে খানিকটা ভিক্স নিয়ে মেখে রাখুন ৫/৬ ঘণ্টার জন্য। ফলাফল নিজের চোখেই দেখে নিন!

০৭। প্রতি ২/৩ মাস পরপর ম্যাস্কারা বদলে নিন। কিন্তু খুব দরকারের সময় ম্যাস্কারা যদি শুকিয়ে থাকে, তাহলে গরম পানিতে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠবে আবার!

০৮। চিকন ঠোঁটকে মোটা দেখাতে চাইলে হালকা শেডের একটি লিপ্সটিক লাগিয়ে ওপর ও নিচের ঠোঁটের মাঝখানে একটু গ্লস লাগিয়ে নিন। আলোর প্রতিফলনে ঠোঁটকে মোটা দেখাবে।

০৯। সঠিক ভ্রু শেইপ বোঝার জন্য একটি পেন্সিল নাকের পাশ থেকে চোখের কোণা বরাবর ধরুন। এখান থেকেই ভ্রু শুরু হয়। এরপর পেন্সিলটি নাকের পাশ থেকে চোখের শেষ মাথায় ধরুন। এখানে এসেই ভ্রু শেষ হয়।

১০। ঘরোয়াভাবে ব্রণ প্রতিরোধের জন্য কয়েকটি অ্যাস্পিরিন ট্যাবলেট গুঁড়ো করে পানিতে মিশিয়ে নিন। খুব মিহি একটি মিশ্রণ তৈরি হলে পরে ব্রণের ওপর লাগিয়ে রাখুন সারারাত ধরে। সকাল বেলায় ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে ফেলুন। অ্যাস্পিরিনের অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল গুণের কারণে ব্রণ চলে যাবে এবং লালচে ও ফোলা ভাব দূর হবে।

১১। ব্ল্য্যাক হেডস দূর করতে পানির সাথে বেকিং সোডা মিশিয়ে ৫/৭ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রাখুন। এরপর ভালো করে ধুয়ে ফলাফল নিজেই দেখুন।

১২। ঝকঝকে সাদা দাঁত পেতে বেকিং সোডার সাথে কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে দাঁত ব্রাশ করে নিন। এবার দন্ত বিকশিত করে হাসুন।

১৩। পার্টি থেকে ফিরে চুলের জট ছাড়াতে পারছেন না? চিরুনি নিয়ে যুদ্ধ করা বন্ধ করুন। চুলে নারিকেল তেল দিয়ে সারা রাত অপেক্ষা করুন। সকালে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে দেখুন আবার কেমন ঝরঝরে হয়ে গেছে আপনার চুল!

১৪। মেকআপ রিমুভার শেষ? অসুবিধে নেই। খানিকটা জলপাইয়ের তেল কিংবা ভ্যাসেলিন নিয়ে মেখে নিন সারামুখে। এবার আলতো তুলো দিয়ে ঘষে তুলে ফেইস ওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মেকআপ তোলা নিয়ে আর কোন দুশ্চিন্তা নেই।

১৫। পছন্দের রঙের লিপস্টিক খুঁজে পেলেন না? তাতে কী হয়েছে? আপনার আই শ্যাডো প্যালেটে নিশ্চয়ই সেই রংটি রয়েছে! খানিকটা সেখান থেকে চামচ দিয়ে তুলে নিয়ে ভ্যাসেলিন মিশিয়ে ঠোঁটে লাগাতে পারেন। কাজ চলে যাবে!
আশা করি টিপসগুলো কাজে লাগবে আপনাদের। ভালো থাকুন।

সোমবার, ১ অক্টোবর, ২০১৮

যে সকল ভুলে বিবাহিতা নারীকে বেশি বয়স্ক দেখায়


ব্যাপারটি কিন্তু শতভাগ সত্য। একটু খেয়াল করলেই দেখবেন যে অনেক বাঙালি নারীকেই বিবাহের পর তার বয়সের তুলনায় অধিক বয়স্ক দেখায়। উন্নত দেশগুলোতে যেখানে ৪০-এও একজন নারী থাকতে পারে আকর্ষণীয়া, সেখানে ৪০ মানে আমাদের দেশে মধ্যবয়স্কা। শুধু তাই নয়, অনেক কমবয়সী বিবাহিতা মেয়েদেরকেও তাঁদের বয়সের তুলনায় অনেক বেশী বয়স্ক দেখায়। কেন? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদেরই কিছু ভুলের মাঝে। চলুন, জেনে নিই সেই ভুলগুলো।

১) অল্প বয়সে অধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়া: আমাদের দেশে খুব অল্প বয়সে বিয়ে এবং বিয়ের পর পড়ি একাধিক সন্তানের মা হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটি এখনো প্রচলিত। প্রথমত, খুব অল্প বয়সে বিয়েটাই নারীর জীবনে হওয়া উচিত নয়। আর বিয়ের পর দ্রুত সন্তানের মা হয়ে যাওয়া বা ঘনঘন সন্তান প্রসব নারীর স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য দুটোই নষ্ট করে ফেলে। সন্তান ধারণ অনেক ধকলের একটি কাজ। অধিক সন্তান হলে তার বিরূপ প্রভাব নারীর দেখে প্রকট হয়ে দেখা দেয়।

 ২) সন্তান হবার পর নিজের যত্ন না নেয়া: আমাদের দেশের মেয়েদের মাঝে এটি আরও বড় একটি সমস্যা। সন্তান হবার পর খুব সংখ্যক নারীই নিজের স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্য মেইনটেইন করেন। সন্তান হবার সময় যে বাড়তি ওজন হয়, সেটা ঝরিয়ে ফেলা খুবই জরুরী। নাহলে বাড়তে থাকে আর বাড়তেই থাকে। অন্যদিকে সন্তান হবার সময় ত্বক ও চুলের ক্ষতি হয় অনেকেরই। সন্তানের যত্ন তো করতেই হবে। কিন্তু নিজের সৌন্দর্যের জন্যও সময় বের করতে হবে বৈকি। সুষম আহার, ব্যায়াম ও নিয়মিত সৌন্দর্যচর্চাই এর সমাধান।

৩) ভুল নাকফুল নির্বাচন: বিবাহিত নারীদের একটি বড় অংশ আমাদের সমাজে নাকফুল পরিধান করে থাকেন। কিন্তু ভুল নাকফুল নির্বাচনের কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই নাকফুল বাড়িয়ে তোলে আপনার বয়স। যেমন, যাদের নাক বোঁচা বা একটু মোটা, তারা কখনোই বড় নাকফুল বা নোলক পরিধান করবেন না। নাকফুল যত ছোট হয়, ততই সুন্দর। যাদের নাক খব বেশী চিকন, তাঁরাও বড় নাকফুল পরিহার করুন। যত সিম্পল ডিজাইনের নাকফুল, বয়স দেখাবে ততই কম। যত বড় পরবেন, আপনাকে ততটাই বয়স্ক দেখাবে। নাকে একটু ফুটো আসলেই বাড়তি কয়েক বছর যোগ করে দেয় চেহারায়।

৪) ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকা: আমাদের দেশের নারীদের মাঝে ব্যায়ামের অভ্যাস খুব কম। কিন্তু আসলে অল্প বয়স হতেই এই অভ্যাস গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরী। ব্যায়াম কেবল দেহের ওজনই ঠিক রাখে না, পাশাপাশি ত্বককে রাখে টানটান ও যৌবনদীপ্ত। শারীরিক ক্ষমতাও রাখে উচ্ছল।

৫) অতিরিক্ত গহনা পরা: গহনা প্রীতি বাঙালি নারীর আছেই। বিয়ের পর এই প্রবণতা আরও বাড়ে। কিন্ত অতিরিক্ত গহনা পরার আগে মনে রাখবেন, যত জবড়জং গহনা পরবেন, আপনাকে ততই বয়স্ক দেখাবে।

৬) ভুল পোশাক নির্বাচন: বিয়ে এবং কয়েকটি সন্তান হয়ে যাওয়ার পর অনেক নারীই আর নিজের পোশাকের দিকে খেয়াল রাখেন না। এটি খুব বড় একটি ভুল। আপনার বয়স যতই হোক না কেন, ওজন যেমনই হোক না কেন, সুন্দরভাবে পোশাক পরলে সবই দৃষ্টিনন্দন মনে হবে। নিজের দেহের সাথে মানানসই কাট ছাঁট ও রঙের পোশাক নির্বাচন করুন। সুন্দর রঙের পোশাক পরিধান করুন। দেখেবন নিজের কাছেও নিজেকে দেখতে ভালো লাগছে।

৭) বাজে হেয়ার স্টাইল: চুলের কাট একজন মানুষের বয়সে বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনার সন্তান হয়েছে বলেই নিজের চুলগুলো কোনরকম বেণী বা খোঁপা করে ফেলে রাখবেন, এমন ধারণা থেকে বের হয়ে আসুন। ভালো পার্লারে গিয়ে সুন্দর একটি মানানসই হেয়ারকাট মেইনটেইন করবেন। চলে খুব বেশী রঙ না করিয়ে ন্যাচারাল রঙের কাছাকাছি শেড ব্যবহার করুন। অতিরিক্ত রঙ ব্যবহারেও বয়স্ক দেখায়।

৮) প্রয়োজনীয় ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদানের অভাব: নিজের খাওয়ার দাওয়ার দিকে নজর খুব কম বাঙালি নারীই দিয়ে থাকেন। সঠিক পুষ্টির অভাবে কেবল আপনার সৌন্দর্যই হারিয়ে যায় না, প্রভাব পড়ে আপনার স্বাস্থ্যেও। তাই নিজের জন্য একটি ব্যালান্সড খাদ্য তালিকা মেইনটেইন করা সব মেয়ের জন্য দরকার।

বয়স শরীরে নয়, বয়স নিজের মনে। নিজের মনের মত করে নিজেকে সাজিয়ে তুলুন, নিজেকে যত করুন, নিজের খেয়াল রাখুন। বয়সের আগেই বয়স্ক দেখানোর সমস্যা আর থাকবে না জীবনে।